ওয়েব ডেস্ক: প্রায় ৩৫১ বছর আগের গল্প। অবিভক্ত ২৪ পরগনার (Undivided 24 Parganas) ডায়মন্ড হারবারের (Diamond Harbour) বিস্তীর্ণ এলাকা তখন বন্যায় জলমগ্ন। আর সেই বন্যার জলে এক কাঠামো ভেসে ভেসে এসে উপস্থিত হয় পারুলিয়া গ্রামের জমিদার বাড়িতে (Parulia Jamidar Barir Pujo)। মন্ডলদের পরিবার তখন সেখানের জমিদারি সামলাচ্ছে। এই কাঠামো ভেসে আসার দিনই কাকতালীয়ভাবে জমিদার কালী কুমার মন্ডল একটি স্বপ্নাদেশ পান। বাড়িতে ভেসে আসা কাঠামোর উপর মায়ের পুজো করার কথা বলা হয় স্বপ্নে।
তারপরই শুরু হয় পারুলিয়ার বনেদি বাড়ির এই দুর্গাপুজো (Durga Puja)। কথিত আছে, জমিদার কালী কুমার মন্ডল তৎকালীন সময়ে অবিভক্ত ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবারে প্রথম মা দুর্গার আরাধনা শুরু করেন। পুজো উপলক্ষে বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রজারা আসতেন জমিদার বাড়িতে। পুজো কটা দিন আশেপাশের বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ ভিড় জমাত মন্ডল বাড়ির দুর্গা দালানে।
আরও পড়ুন: ৪৫০ বছর ধরে “অষ্টাদশভূজা” রূপে মা পূজিত হন এই পরিবারে!
এখনও সেই জমিদার বাড়ির সামনেই রয়েছে পালকি ঘর। দুর্গা দালানের একদিকে আছে এক গোপন রাস্তা, যার মাধ্যমে সেই সময় শুধুমাত্র বাড়ির মহিলারা যাতায়াত করতেন। যেতেতু তাঁরা বাইরে বেরোতেন না, তাই দুর্গা দালানে পৌঁছতে জমিদার বাড়ির মেয়েরা ব্যবহার করতেন সেই গোপন রাস্তা। তবে এখন সেসব অতীত। সময়ের সঙ্গে ফিকে হয়েছে জৌলুশ। তবে আজও রীতি মেনে মা দুর্গার আরাধনা করেন মন্ডল পরিবারের সদস্যরা।
৩৫১ বছরের প্রাচীন সেই কাঠামো আজও রয়েছে পারুলিয়ার দুর্গা দালানে। তবে ভেঙে পড়েছে সেই প্রাচীন জমিদার বাড়ির অনেকটা। তবে ভগ্ন জমিদার বাড়িতে আজও মা দুর্গাকে নিয়ে মাতামাতি মোটেও কমেনি। পুজো কদিন বাড়ি ফিরে আনন্দে গা ভাসান মন্ডল পরিবারের সকলেই। এখনও বাজে ঢাক, কাঁসর। এখনও হয় বোধন, সন্ধিপুজো। পুজো এলে এখনও আলোকিত হয়ে ওঠে গোটা পারুলিয়া গ্রাম। আর এভাবেই ভগ্ন আট্টালিকায় জীবন্ত হয়ে ওঠে বাংলা ও বাঙালির শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্য।
দেখুন আরও খবর: